রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে ডাকা সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় লোকজন। এতে গুলিতে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাগলাপীর এলাকায় অবরোধ করে কয়েক হাজার স্থানীয় লোকজন। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতেও বাধা দেয় তারা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যে যুবক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তাঁর বাড়িসহ পাঁচটি হিন্দু বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া ১৪ থেকে ১৫টি বাড়ি ভাঙচুর করে তারা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরাতে গুলি, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছোড়ে। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে একজনের মৃত্যু হয়। তার নাম হাবিবুর রহমান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রংপুর মেডিকেলের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. সুজন বলেন, এ পর্যন্ত হাসপাতালে ১৪ ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানায়, আহতদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম নামে এক পুলিশ কনস্টেবল রয়েছেন। তাঁর অবস্থা গুরুতর।
নিহতের স্বজন আজিমুল ইসলাম বলেন, হাবিবকে মৃত অবস্থায় পেয়ে ভর্তি করেনি হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ। লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেঝেয় পড়ে রয়েছে।
নিহত হাবিবের বোন আমেনা বেগম অভিযোগ করেন, পুলিশের গুলিতে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে আছেন। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম বলেন, তিনটি গাড়ি নিয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের বাধায় তাঁরা যেতে পারেননি। দুটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে স্থানীয়রা।
সংঘর্ষের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি। ইউএনওকে (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। ঘটনার সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি।’
ফরিদপুরের সদর উপজেলায় এলাকায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার কানু শেখ (৭০) নামের এক বৃদ্ধকে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে এলাকার একটি মাঠে নিজেদের একটি ছাগল আনতে যায় মেয়েটি। এ সময় শিশুকে একটি হলুদ ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন ওই বৃদ্ধ। তার চিৎকার শুনে এলাকার মুজাহিদ ও মিলন নামের দুই যুবক ধর্ষণের দৃশ্যটি মোবাইল ফোনে তোলে। পরে কানু শেখকে তা দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে তারা। এ সময় কানু শেখ ৭০০ টাকা যুবকদের হাতে দেন। তারা আরো টাকার জন্য চাপ দেন।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানায়, আজ সকালে ঘটনাটি গোপালপুর বাজারে বিভিন্ন লোকের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় তারা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার লোকজন কানু শেখের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে ধরে উত্তমমাধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
ঈশান গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি ঘটনাটি জেনেই ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বৃদ্ধকে আমরা ধরেছি, পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। কোতোয়ালি থানার পুলিশের হাতে ধর্ষককে সোপর্দ করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার আমরা উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।’